এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ ও বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছেন সারাদেশ থেকে আসা হাজারো এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। ফলে তোপখানা রোডের উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এলাকা না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল থেকে সচিবালয়ের মোড় থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত অবস্থান নেন শিক্ষকরা। প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক বন্ধ থাকায় যানবাহনগুলোকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সমাবেশের আয়োজন করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ৯টা থেকে শিক্ষকরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে প্রেসক্লাবের সামনের পুরো এলাকা পূর্ণ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
কুমিল্লা থেকে আসা মাদ্রাসাশিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মতোই আমরা পরিশ্রম করি, কিন্তু আমরা বৈষম্যের শিকার। আমরা বাড়ি ভাড়া বাবদ পাই মাত্র এক হাজার টাকা। অন্যদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা পান মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ।
সিলেটের কানাইঘাট থেকে আসা শিক্ষক আলী রহমান বলেন, বারবার আশ্বাস নিয়ে ফিরে গেছি। এবার আর আশ্বাসে কাজ হবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকব।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৮ সালের আন্দোলনের পর সরকার ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও ২০% বৈশাখী ভাতা চালু করেছিল এবং জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনায় শিক্ষা উপদেষ্টা বৈষম্য নিরসনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এ বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ২২তম দিনে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উৎসব ভাতা ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি এবং বাজেটে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও শ্রান্তি বিনোদন ভাতা কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়। বাজেটে বরাদ্দ থাকলেও এখনও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। এ জন্য জোট ১০ আগস্টের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছিল, অন্যথায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবিগুলো জানিয়ে আসছি। ২০১৮ সালে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ হয়নি। আর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টাও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বাস্তবায়নের কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি নেই। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে আমরা একযোগে দাবি তুলে ধরব এবং প্রয়োজনে সচিবালয় পর্যন্ত পদযাত্রা করব। এটা শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। যদি এবারও দাবি পূরণ না হয়, তবে আমরা আরও বৃহত্তর ও কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।আরটিভি